খেজুর গুড় তৈরি করতে পাসপোর্ট ভিসা করে বাংলাদেশের দুই কৃষক গাজলডোবায়

বাপি ঘোষ,শিলিগুড়িঃ জাকিয়ে শীত পড়েছে। আর কদিন বাদেই পৌষ সংক্রান্তি। সংক্রান্তির এই সময় পিঠেপায়েসের প্রচলন রয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে।এই পিঠে পায়েসে যদি খেজুর গুড় ব্যবহার হয় তবে তার স্বাদই হয় অন্যরকম।এই সময় বাংলাদেশ থেকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গাজলডোবার গ্রামে দুজন কৃষক এসেছেন খেজুর গুড় তৈরি করতে।তাদের একজন মহম্মদ রহিম আর একজন আব্দুর রসিদ।তারা এসেছেন রাজশাহি জেলা থেকে।রীতিমতো পাসপোর্ট ভিসা করে তারা গাজলডোবার দধিয়া গ্রামে এসে নিজেদের আপাতত ঠিকানা তৈরি করেছেন।ঘর ভাড়া তারা নিয়েছেন মাসিক এক হাজার টাকার ভিত্তিতে।তারা এসেছেন আশ্বিন মাসে,ফিরে যাবেন মাঘ মাসে। তারা ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসে গাজলডোবার তিস্তার পারে সব খেজুর গাছগুলো নিয়ে নিচ্ছেন।গাছ প্রতি দুকেজি গুড় প্রদানের চুক্তি তাদের হয়েছে গাছ মালিকের সঙ্গে।এসব গাছ থেকে খেজুর রস তৈরির পদ্ধতি কারও জানা নেই। ফলে স্থানীয়রা কেও খেজুর গুড় তৈরি করছিলেন না। কিন্তু রহিম,আব্দুরদের আসার সুবাদে ওই গ্রামের খেজুর গাছ মালিকদের হাতে যেমন দুটা পয়সা আসছে তেমনই বাংলাদেশের এই অতিথিদের হাতেও দুটা পয়সা আসছে। তারাই গাছ থেকে খেজুর রস বের করে তা উনুনের আঁচে গুড় তৈরি করে নিচ্ছেন।তারপর তা ৬০ টাকা পাইকারি কেজি দরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে। পৌষ মাস আসতেই এখন তার অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন তারা এভাবে ৩৫ – ৪০ কেজি খেজুর রস বের করে নিতে পারছেন।বিগত তিন বছর ধরেই তারা আসছেন উত্তরবঙ্গে।যাওয়ার সময় অতিরিক্ত অর্থ রোজগার করে তারা তাদের দেশের বাড়িতে , পুত্র,কন্যার মুখে হাসি ফোটান।এই খেজুর গুড়ের রোজগার থেকেই মহম্মদ রহিম,আব্দুর রসিদদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চলছে। বছরর অন্য সময় তারা বাংলাদেশে কৃষি কাজ করে সংসার চালায়।ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসে খেজুরের রসে যেভাবে স্বনির্ভরতার রাস্তা তারা দেখিয়ে চলেছে তা কিন্তু অনেকের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠছে।