শিলিগুড়ি থানার সামনে এই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ কেন

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ শিলিগুড়ি থানার সামনে রয়েছে একটি শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ। সেই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ এক ঐতিহাসিক স্থান শিলিগুড়ির জন্য। কিন্তু তা আজ অনেকেরই অজানা।সেই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভের সামনে কুমোরেরা মাটির হাড়ি বিক্রি করেন।তাঁরা মাঝেমধ্যে সেখানে ধুপকাঠি বা মোমবাতি জ্বালিয়ে দেন।কিন্তু সেই ঐতিহাসিক শহিদ স্মৃতি স্তম্ভের গুরুত্ব কিজন্য তা সেখানে কেও বলতে পারছেন না।তবে শিলিগুড়ির পুরনো দিনের লোকজন বলেন,১৯৪২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হয়েছিল।পুলিশ সেই সময় কংগ্রেস নেতা শিউমঙ্গল সিং ও ডঃ ব্রজেন্দ্র বসু রায়চৌধুরীকে আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই ১৮ আগস্ট গ্রেপ্তার করেছিলো।শিলিগুড়িতে একটি মৌন মিছিল হলে পুলিশ কংগ্রেস কর্মীদের গ্রেপ্তার করে। ১৯৪২ সালের ১ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে ধর্মঘট পালিত হয়। শিলিগুড়ির মহিলা কংগ্রেস কর্মীরা তাতে সক্রিয় ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে এক ধর্মঘট হলে প্রায় এক হাজার মানুষের বিরাট মিছিল শহর পরিক্রমা করে। সেই মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সীতা বোস রায়চৌধুরী, ডঃ ব্রজেন্দ্রনাথ বসুচৌধুরী এবং কালিদাসী সেনগুপ্ত। তারা সবাই মিলে শিলিগুড়ি পরিক্রমা করে পুলিশের দিকে এগিয়ে যান।সেই মিছিলে শ্লোগান ছিলো ইংরেজ ভারত ছাড়ো, ব্রিটিশ সরকার ধ্বংস হোক।মিছিলের ভিড় শিলিগুড়ি থানার সামনে পৌছালে মিছিল থানায় প্রবেশ করতে চায়।সেখানে কর্তব্যরত সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তখন গুলি চালানোর নির্দেশ দেন।সেই গুলিতে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের।সেই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন হরিদাস মজুমদার, মনোমোহন রায়,সন্তোষ কুমার দাস,বড়দাকান্ত ভট্টাচার্য, আশুতোষ বিশ্বাস, বিজয় কৃষ্ণ ঘোষ, চিত্তদয়াল চক্রবর্তী প্রমুখ। সেই আন্দোলনে ছাত্ররাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেসব ছাত্র সেই আন্দোলনে অংশ নেয় তারমধ্যে দীপেন্দ্রনাথ রায় সরকার, দিলীপ কুমার সরকার, উপেন্দ্রনাথ দাসের নাম উল্লেখযোগ্য।
সেই আন্দোলন এবং শহিদ স্মরনে থানার সামনে বসে শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ। যদিও সম্প্রতি শিলিগুড়ি পুরসভা জানিয়েছে, ওই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে।