![20200530_135305](https://www.khabarerghanta.in/wp-content/uploads/2020/05/20200530_135305.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ করোনার জেরে লকডাউন শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নানারকম মানবিক ও সামাজিক কাজ করছে। কিন্তু এককভাবে মানবিক ও সামাজিক কাজ করে শিলিগুড়িতে নজির তৈরি করেছেন অরবিন্দ পল্লীর সমাজসেবী বাপন ঘোষ ওরফে রাজু। রবিবার ৩১ মে তারিখেও বাপন শিলিগুড়ির বিশিষ্ট সমাজসেবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় হাকিমপাড়ার বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের স্কুল শিলিগুড়ি উদয়ের ছেলেমেয়েদের হাতে চাল, আলু, সয়াবিন, কুয়াশ, বিস্কুট সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন। বাপনের এই কাজে সবসময় পাশে থাকছেন তাঁর স্ত্রী পাঞ্চালি ঘোষ।
![](https://www.khabarerghanta.in/wp-content/uploads/2019/05/green-tea.jpg)
মার্চ মাসের শেষে দেশে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে শুরু হয় বাপনের সামাজিক ও মানবিক কাজ। বাপনে আসলে ছোট থেকে খুব লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছেন। এখন তিনি একজন ঠিকাদার। শিলিগুড়ি পুরসভা এবং এসজেডিএতে কাজ করেন। কিন্তু সেখান থেকে আয়ের একটা অংশ তিনি সামাজিক ও মানবিক কাজে ব্যয় করছেন।
এর আগে প্রতি বছর শারদোৎসব এলে বাপন বিভিন্ন দুঃস্থ অসহায় মানুষকে বস্ত্র দান করে এসেছেন। এবার করোনা দুর্যোগ শুরু হওয়ার পর তিনি যেভাবে লকডাউনের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেন তা নজিরবিহীন। প্রথমে বাপন তাঁর ছোট পুত্র রুদ্রায়নের জন্মদিন অনুষ্ঠান বাতিল করে সেখানের খরচ বাঁচিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে অর্থ সাহায্য করেন। এরপর তিনি তাঁর বাড়ি অরবিন্দ পল্লীর বাড়ির সামনে দুঃস্থ অসহায় মানুষদের মধ্যে ত্রান বিলি শুরু করেন। ধারাবাহিকভাবে সেই ত্রান শিবির চলতে থাকার সময় পদ্মশ্রী করিমুল হকও সেখানে এসে উৎসাহ দিয়ে যান। বাপন পদ্মশ্রী করিমুল হকের নির্মীয়মান হাসপাতালের জন্যও কিছু অর্থ সাহায্য করেন। আবার খবরের ঘন্টার উদ্যোগে বাপনের সহযোগিতায় শিলিগুড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রান্তিক মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বাড়িতেও উপহার ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলতে থাকে। তাছাড়া সেভকে লকডাউনের জেরে খাদ্য সঙ্কটে পড়া বানরদেরও খাদ্য পৌছানোর কাজে নামেন বাপন। গত ৩০ মে শিলিগুড়ি টিকিয়াপাড়ার পরমানন্দ যোগানন্দ যোগাশ্রমের অনাথদের হাতে প্রচুর চাল, আলু, কুয়াশ, লবন, সরষে তেল প্রভৃতি পৌঁছে দেন বাপন ও তাঁর স্ত্রী। অন্যদিকে ওইদিনই বাপন ও তাঁর স্ত্রী এনজেপির কনসার্ন পরিচালিত জাগৃতির প্ল্যাটফর্ম শিশু ও তাদের পরিবারের হাতে প্রচুর সুকনো খাবার তুলে দেন। লকডাউনের ফলে এনজেপি স্টেশনে যাত্রী না থাকায় প্ল্যাটফর্ম শিশুরা সমস্যায় পড়েছে। বাপন তাদের পাশে থেকে মানবিক মুখের পরিচয় দেন। রবিবার আবার বাপন ও তাঁর স্ত্রী পাঞ্চালি শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের স্কুল শিলিগুড়ি উদয়তে খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসাবে পৌঁছে দিয়েছেন।
সমাজসেবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বাপনের এই কাজের প্রশংসা করেন। প্রকৃতপক্ষে নিজের ব্যবসা এবং সংসারের খরচ বাঁচিয়ে বাপন যেভাবে একক উদ্যোগে এই লকডাউনে অসহায় দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন তা এক অন্যরকম নজির হয়ে থাকলো। ইচ্ছা থাকলে এবং সংবেদনশীল মন থাকলে সমাজের জন্য কঠিন সময়েও বিরাট মানবিক ধর্ম যে পালন করা যায় তার এক দৃষ্টান্তও তৈরি করলেন বাপন ও পাঞ্চালি।