সঙ্গীত ছাড়া নাটক, সাহিত্যচর্চা, সমাজসেবা নিয়ে আছেন অর্চনাদেবী

শিল্পী পালিতঃ আমাদের খবরের ঘন্টার সম্পাদক ও প্রকাশক বাপিদার পরামর্শমতো শুরু হয়েছে আত্মকথা বিভাগ। এর আগে এই আত্মকথা বিভাগে বিভিন্ন গুনী মানুষের নিজেদের লেখা মেলে ধরা হয়েছে। আজ শিল্পী অর্চনা মিত্রের কথা মেলে ধরা হচ্ছে —-

আমি শ্রীমতি অর্চনা মিত্র।
আমার জন্ম ওপার বাংলার ফরিদপুরে, বাবা ছিলেন ডাক্তার । ডাক্তার হলেও বাবার নেশা ছিল সঙ্গীত।বাবার হাত ধরেই আমার প্রথম হারমোনিয়ামের সুর তোলা। একাত্তরের যুদ্ধের সময় বাবা প্রয়াত হবার পরে এপার বাংলায় চলে আসা।কলকাতায় আমি অনেক শিক্ষা গুরুর কাছে সংগীতের তালিমপ্রাপ্ত হয়েছি। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমার শিলিগুড়িতে আসা।
এখানেও কয়েকজন সঙ্গীত গুরুর কাছে তালিমপ্রাপ্ত হয়েছি। অবশেষে সুর ঝংকার মিউজিক কলেজ যা শিলিগুড়ি কলেজের সামনে অবস্থিত । সেখানে আমার সঙ্গীতগুরু ছিলেন শ্রী শরবিন্দু দাসগুপ্ত মহাশয় । আমি নানান অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেছি। উত্তরবঙ্গ উৎসব ছাড়া বই মেলা , পৌষ মেলায়। সব রকমের গানই করে থাকি । বাংলা লোক সঙ্গীতের সিডিও বের হয়েছে আমার। শিলিগুড়িতে সংগীতের একটি ‘ঐকতান’ গ্রুপের সঙ্গে আমি প্রথম থেকেই যুক্ত। এছাড়া আমি সমাজসেবামূলক বহু কাজ করে যাচ্ছি। আমার বাড়ী প্রধাননগর বাঘাযতীন কলোনিতে। এখানে মুক্তমঞ্চের মাঠের পাশের গলিতেই আমার নিজের হাতে তৈরি করেছি “রেড্ডিসিঁথি মহিলা মহল সংস্কৃতি সংস্থার”। এখানে আমি পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। যেমন অল্প পয়সায় সেলাই ,নৃত্য ,সঙ্গীত, এবং নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকি। বসন্ত উৎসব, কবি সাহিত্য চর্চার আসর বহু গুনীজনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।নিয়মিত সাহিত্য চর্চার সঙ্গেও যুক্ত আমি। বহু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে আমার কবিতা। গল্প,অনু গল্প, আশ্রমকথা,কালিণী,এক মুঠো রোদ,সাহিত্য অঙ্গন, দলছুট,উওরের প্রয়াস, কাব্য নিকেতন, এপার বাংলা ওপার বাংলা নিয়ে আজকের অনুভব এর আমি সহসভাপতি। আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষার সারা জীবনের সদস্য। এ সব জায়গায় নিয়মিত আমার কবিতা,গল্প,অনু গল্প,প্রকাশিত হয়। বর্তমানে দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত । আমি বহু নাটকও করেছি। আমার একটি নাটকের গ্রুপ ছিল “উত্তরা নাট্য সংস্থা”। পুরুষ বর্জিত এই সংস্থাটি আমার তৈরি করা ছিল। বহু নাটক করেছি আমি দীনবন্ধু মঞ্চে। যেমন ভোরের আরতি, রং করা গোপাল,দৃষ্টি দান ইত্যাদি। বেশ কয়েকবার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও পেয়েছি। এখনো পর্যন্ত আমার নাটকের নেশা কাটেনি। মাঝে মাঝেই নানান অনুষ্ঠানে শ্রুতি নাটক পরিবেশন করি। যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত থাকব। সাহিত্য চর্চা, সঙ্গীত ও নাটক এ সব নিয়েই ব্যস্ত থাকার ইচ্ছে আছে।