বাপি ঘোষ,শিলিগুড়িঃছুটির দিন হলেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ক্রমশই ভিড় করছেন গাজলডোবার বোরোলি রেস্তরাতে। গাজলডোবায় তিস্তা থেকে বিভিন্ন রকম মাছ ধরছেন মৎস্যজীবিরা।তিস্তার ধারে সেখানে বিভিন্ন রকম চিংড়ি মাছ ভাজা বিক্রি হয়। তবে বোরোলির স্বাদই আলাদা। উত্তরবঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছিল বোরোলি মাছ।সেই মাছ দিয়েই যে সুন্দর পরিবেশনের মাধ্যমে পর্যটকদের মন জয় করা যায় তা প্রমান করে দিয়েছেন শিল্পোদ্যোগীী পরিমল বসু।
শিলিগুড়ি কলেজপাড়ার শিল্পোদ্যোগী পরিমল বসু ১৯৯৭ সালে গাজলডোবাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। এক সময় তিনি স্রেফ সপরিবারে সময় কাটানোর জন্য গাজলডোবায় জমি নেন। তারপর ধীরে ধীরে বোরোলি মাছ ঘিরে বোরোলি রেস্টুরেন্ট তৈরির ভাবনায় মাতেন। তবে পরিমলবাবু বলেন, বোরোলি মানে শুধু মাছ নয়।বোরোলি মানে অ্যাম্বিশন,ইনডিপেনডেন্স,স্ট্রেংথ,রিলায়াবিলিটি,ডিটারমিনেশন এবং প্রফেশনালিজম।ইউরোপের পাঁচটি দেশে পদবি হিসাবেও বোরোলি নামটি রয়েছে। এইসব ভাবনা তাকে বোরোলি রেস্তোরাঁ খোলার জন্য আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করে। তাছাড়া ওই এলাকায় অনেক বেকার ও গরিব মানুষ আছেন। রেস্তোরাঁ হলে অনেক গরিবের কর্মসংস্থান হতে পারে ভেবে তিনি আরও বেশি করে কাজে নামেন। স্থানীয় মৎস্যজীবিদের কাছ থেকে মাছ কেনাতে তাদেরও দুটা পয়সা আসছে। সেই রেস্তোরাঁয় বোরোলি মাছের চার রকম পদ তৈরি হচ্ছে । বোরোলি ফ্রাই বা ভাজা মাছ, কালোজিরা সমবার দিয়ে বোরোলির ঝোল, সরষে দিয়ে বোরোলি আর বোরোলি ঝাল। পরিমলবাবুর রেস্তোরাঁ চত্বরে আছে বিরাট পুকুর।সেখানেও মাছ চাষ হয়। পুকুরের পাশে পার্কের মতো সুন্দর পরিবেশ। এরপর তিনি সেখানে স্যুইমিং পুল,কটেজ তৈরির ভাবনায় মেতেছেন। ব্যুফে পদ্ধতিতেও খাওয়াদাওয়া শুরু হয়েছে। বড় দিনের ছুটি থেকে সেখানে ভিড় উপছে পড়ছে।একদিকে ভোরের আলোর টান, আরেকদিকে বোরোলি, তিস্তা, জঙ্গল একটু অবসর সময় কাটাতে এই পরিবেশের জুড়ি নেই। পরিমলবাবু প্রথমে দশ বিঘা জমি নেন। এখন তার জমি আরও বেড়েছে। আগামীতে তিনি চিকিৎসা কেন্দ্র খোলার কথাও ভাবছেন। নতুন বছরের জন্যও সেখানকার টান অন্যরকম বেড়েছে।