শিল্পী পালিত ঃ আজ খবরের ঘন্টার এই ওয়েবপোর্টাল নিউজে আত্মকথা বিভাগে শিলিগুড়ি কলেজপাড়ার সঙ্গীত শিল্পী সোমা পালের কথা মেলে ধরা হলো –
“আমি সোমা পাল।এখন আমার বাড়ি শিলিগুড়ি কলেজপাড়ায়। আমি আমার সঙ্গীত জীবনের কিছু কথা আপনাদের সামনে মেলে ধরলাম। যদিও বলার মতো তেমন কিছই নেই। ২২ শে শ্রাবণ সোমবার ব্যান্ডেল এর মগরা হসপিটালে আমার জন্ম। সোমবার জন্ম তাই নাম রাখা হল সোমা। আমার বেশিরভাগ বড় হাওয়াটাই সাউথ বেঙ্গলে। যেহেতু বাবা বদলির চাকরি করতেন তাই চাকরির সুবাদে ঘুরে ঘুরেই আমি মানুষ হয়েছি।
আমি একান্নবর্তী পরিবারে মানুষ। ঠাকুমা, ঠাকুরদা, বাবা মা, কাকু কাকিমা, পিসি আমার দুই ভাই এবং আমি এই ছিল আমাদের পরিবার। এছাড়াও আরও অনেকেই ছিলেন। বাড়িতে একজন দাদু আসতেন বাবা মা ছোট পিসি এদেরকে গান শেখাতে। তাই সেই ছোট বেলা থেকেই গান শুনে শুনেই বড় হয়েছি। পরে এই ছোট পিসির কাছেই আমার হাতেখড়ি হয়েছে। তারপরেও নানা জায়গায় শিখেছি। আর এই গান শেখার পেছনে আমার মা আর আমার দাদার অবদান অনস্বীকার্য। ওঁরা আমাকে সবসময় সাহস এবং উৎসাহ যুগিয়ে গেছেন।
আমরা যখন সাউথ বেঙ্গল এ এলাম তখন থেকেই খুব ভালো ভাবে শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চা শুরু হয় স্বর্গীয় উৎপল বসু মাস্টার মশাই এর তত্বাবধানে। ওখানে এত সুন্দর একটা সাংগীতিক পরিবেশ ছিল যে আজও তা স্মৃতির মণিকোঠায় রয়ে গেছে। দীর্ঘ ৮ বছর আমি ওনার কাছে শিখেছি।
এরপর আমার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর আমি শ্রীমতী মালবিকা চক্রবর্তীর কাছে নজরুলগীতি,আধুনিক ভজন , ইত্যাদি শেখা শুরু করি। এর বেশ কিছুদিন পর আমি কলকাতায় চলে যাই এবং আমার গুরু স্বর্গীয় জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর কাছে গান শেখা শুরু করি। দীর্ঘ ৫ বছর আমি ওনার কাছে গান শিখি। কিন্তু শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রতি যে অগাধ টান সেটা আমাকে নিয়ে যায় উস্তাদ রশিদ খান গুরুজীর কাছে। ওখানে আমি ৪ বছর তালিম নিই। ওখানে তালিম নিতে নিতেই আমি আরো একজনের কাছে তালিম নেওয়া শুরু করি। তিনিই আমার বর্তমান গুরুমা, দিদি বিদুষী শুভ্রা গুহ। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আমি ওনার সাহচর্যে শাস্ত্রীয় সংগীত, ঠুমরি, দাদরা ইত্যাদির তালিম নিয়ে চলেছি।
আমি বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি। সেখানে অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। যেটা গানে আমার পুরষ্কারস্বরূপ।
“সুর আলাপ” নামে আমার একটি গানের স্কুল আছে। সেখানে কিছু ছাত্ৰ ছাত্রীকে আমি গান শেখানোর চেষ্টা করি আমি যতটুকু জানি। গানই আমার ধ্যান জ্ঞান সবকিছু।এটাই আমার কাছে ঈশ্বরের পুজো।যতদিন সম্ভব হবে এই সাধনা আমি চালিয়ে যাব। যদিও এই সাধনা আমি চালিয়ে যেতে পারছি আমার স্বামীর পূর্ণ সহযোগিতায়। উনি এভাবে পাশে না দাঁড়ালে হয়ত এতোটা সম্ভব হোত না।
গান ছাড়া আমার খুব ভালো লাগে লিখতে। তাই মনে যা আসে সেটা খাতা কলমে লিখেও ফেলি। এছাড়া নতুন নতুন পদ রান্না করতে আর নতুন নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেও খুব ভালোবাসি।”
—- সোমা পাল, শিলিগুড়ি কলেজপাড়া।