কিডনির অসুখে আক্রান্ত অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির কাতর আর্তি, ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতাঃএকমাত্র রোজগেরে ছেলে লকডাউনের জেরে আটকে রয়েছে বাংলাদেশে, নিজেরাও পড়ে রয়েছেন রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়ায় মেয়ে জামাইয়ের বাড়িতে। কিডনির অসুখে আক্রান্ত অসহায় বৃদ্ধ দম্পতির কাতর আর্তি ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাবস্থা করার। ওদিকে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে বাংলাদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আটকে পড়ে চরম দুঃসহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে দক্ষিন দিনাজপুরের হরিরামপুরের যুবক শ্যামল পাল। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সরকারের কাছে কাতর আবেদন তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাবস্থা গ্রহন করার। এদিকে বৃদ্ধ দম্পতি দুবেলা দুমুঠো ভাত পেলেও রোজগেরে ছেলে না থাকায় চিকিৎসা করাতে না পেরে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তাঁরা। লকডাউনে এমনই করুন দুর্দশার ছবি ফুটে উঠল রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন গোয়ালপাড়া এলাকায়।

১ লা মার্চ পাসপোর্ট ভিসা নিয়েই বাংলাদেশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন দক্ষিন দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের বাসিন্দা শ্যামল পাল। এপ্রিল মাসেই তাঁর দেশে ফেরার কথা। আচমকা করোনার কারনে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। বন্ধ হয়ে যায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যাবস্থা। বাংলাদেশেই আটকে পড়েন হরিরামপুরের বাসিন্দা শ্যামল। এদিকে তাঁর বাবা মা বৃদ্ধ দম্পতি দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য হরিরামপুরে নিজেদের বাড়িঘর তালাবন্ধ করে চলে আসেন রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়ায় মেয়ের বাড়িতে। সেই থেকে ওই বৃদ্ধ দম্পতির আশ্রয়স্থল মেয়ে জামাইয়ের বাড়ি। জামাইয়ের বাড়িতে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জোগার হলেও তাদের চিকিৎসার কোনও ব্যাবস্থাই হচ্ছেনা। অশীতিপর বৃদ্ধ শিরীষ পাল ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্নাদেবী দুজনেই কিডনির রোগে আক্রান্ত। তাঁদের একমাত্র রোজগেরে ছেলে লকডাউনে বাংলাদেশে আটকে পড়ায় চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন তাঁরা। মেয়ে জামাইয়ের আর্থিক অবস্থাও সেরকম নেই যে তাঁদের চিকিৎসার খরচ জোগাবেন। তাই অশ্রু সজল চোখে বৃদ্ধ দম্পতির কাতর আর্তি, তাদের ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাবস্থা করুক সরকার। মরনাপন্ন অবস্থা থেকে তাদের পরিত্রান করার জন্য কান্নায় ভেঙে পড়লেন অশীতিপর বৃদ্ধ বৃদ্ধা। ওদিকে বাংলাদেশে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়ে চরম দুঃসহ অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই বৃদ্ধ দম্পতির একমাত্র ছেলে শ্যামল। হাতে যাকিছু অর্থ ছিল তা শেষ হয়ে গিয়েছে। দেশে থাকা বৃদ্ধ বাবা মায়ের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বাংলাদেশের ভারতীয় হাই কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। শ্যামলবাবু বলেন, লকডাউনে বাংলাদেশে আটকে থাকা সব রাজ্যের মানুষই ফিরে যেতে পেরেছেন কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরাই আটকে রয়েছেন। সরকারের কাছে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি কাতর আবেদন করে বলেন, তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাবস্থা করা হোক। চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি।