নববর্ষের প্রার্থনা, করোনার অসুখ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক পৃথিবী

নির্মল কুমার পালঃ করোনার অসুখ বা দুর্যোগ বর্তমান পৃথিবীকে অসুস্থ করে তুলেছে। সবাই আজ ঘরবন্দি। আমাদের দেশও তার বাইরে নয়। এরমধ্যেই চলে এসেছে বাংলা নববর্ষ, পয়লা বৈশাখ।এবারে নববর্ষের তাই একটাই প্রার্থনা,এই বসুন্ধরা করোনা মুক্ত। রোগ মুক্ত হোক পৃথিবী।

১৪২৭ বঙ্গাব্দে আমরা পা দিতে চলেছি। ১৪২৬ এর শেষে ভয়াবহ করোনা ভাইরাস যেভাবে মানুষের জীবনযাত্রায় থাবা বসিয়েছে তা ভাবা যায় না। এইরকম দুর্যোগ আমি কেন, আমার পূর্বপুরুষরাও অতীতে দেখেননি। এরকম লকডাউন ভাবতে পারছি না। গোটা পৃথিবীর মানুষ আজ ঘরবন্দি। তবে করোনা মানে যে মৃত্যু তাও নয়। বহু করোনা সংক্রামিত ব্যক্তি সুস্থ হচ্ছেন। ডাক্তার নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন করোনা রোগীদের সুস্থ করার জন্য।
রাজ্যের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী এই দুর্যোগে বেশ কিছু সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছেন। সরকারের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও এই করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতার প্রচার করছি। এই রোগের ভয়ানক দিক হলো, রোগটি খুব ছোঁয়াচে। একজনের হলে তার থেকে বহু মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। উদ্বেগটা সেখানেই। তাই লকডাউন মেনে ঘরবন্দি হয়ে থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
আমাদের দেশ যেহেতু ঘব জনবসতিপূর্ণ। ফলে এখানে চিন্তা আরও বেশি। বিদেশ থেকে রোগটা এলো। তাই আমাদের দেশে আরও আগে লকডাউন এবং সব বিমান যোগাযোগ আরও আগে বন্ধ করে দিতে পারলে আরও ভালো হোত।
এখন ঘরবন্দি হয়ে থাকা। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করা জরুরি। বাইরে থেকে ঘরে এসে হাত ভালো করে স্যানিটাইজ করতে হবে, সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে ভালো করে। হাত না ধুয়ে নাকেমুখে চোখে হাত দেওয়া যাবে না। বাইরে বের হলে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
আমরা হায়দরপাড়া ব্যবসায়ী সমিতি এবং হায়দরপাড়া স্পোর্টিং ক্লাব থেকে সচেতনতার প্রচার করছি বাজারে।
তবে এই দুর্যোগে চিন্তা হয় ভবঘুরে, জনমজুরদের নিয়ে। লকডাউন হওয়াতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। তাদের কথা এখন আমাদের সকলের ভাবা প্রয়োজন। আমরা আমাদের ক্লাব ও ব্যবসায়ী সমিতি থেকে কিছু ত্রান বিলি করেছি। আরও ত্রান আমরা বিলি করবো। আমাদের সকলকে একসঙ্গে মিলে এই দুর্যোগের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হবে। সবাই সরকারি ত্রান তহবিলে দান করলে এই সময় সরকারের হাত আরও মজবুত হয়। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এই করোনার জেরে আরও খারাপ হবে। ছোট ছোট ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী সবার অবস্থা খারাপ। শিল্প কারখানা বন্ধ। তাই সরকারের কাছেও আমরা আবেদন করবো, ছোট ছোট ব্যবসায়ী শিল্পোদ্যোগীদের কথা চিন্তা করে সরকার কিছু প্যাকেজ ঘোষনা করুক।
এই অসময়ে পুলিশ, স্বাস্থ্য কর্মী, বিদ্যুৎ কর্মী, সাংবাদিক বন্ধুরা যেভাবে তাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তার কথা উল্লেখ করতেই হয়। এবারে আর পয়লা বৈশাখের হালখাতা হচ্ছে না। নববর্ষে গণেশ পুজো, হালখাতা বাংলার একটি ঐতিহ্যমন্ডিত উৎসব। এবার সেখানে ধাক্কা। আগেতো মানুষকে বাঁচতে হবে। আগামী বছর এই করোনা দুর্যোগ কাটলে আমরা আবার ভালো করে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে পারবো। সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, ঘরে থেকে করোনাকে পরাস্ত করার লড়াই করুন। আর নববর্ষের এটাই শপথ বা প্রার্থনা, করোনা দুর্যোগ কাটিয়ে এই পৃথিবী আবার দ্রুত সুস্থ, স্বাভাবিক হোক।
( লেখক শিলিগুড়ি হায়দরপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এবং হায়দরপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং খবরের ঘন্টার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য।)