উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলেও জয়জয়কার উত্তরবঙ্গের

নিজস্ব সংবাদদাতাঃমাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিকেও জয়জয়কার উত্তরবঙ্গের। রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করতে না পারলেও দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম থেকে দশম সমস্ত স্থানেই মেধাতালিকায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণরা।এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৯৮, ৪৯৭ এবং ৪৯৬ নম্বর পেয়ে বালুরঘাটের পাঁচ ছাত্র-ছাত্রী রাজ্যের সম্ভাব্য দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।

৪৯৮ নম্বর পেয়ে বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র সৌগত সরকার রাজ্যে সম্ভাব্য দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। তার এই কৃতিত্বের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি পরিবারের সকলের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করলেও, মা তার প্রেরণা ছিল বলে জানিয়েছে সৌগত। ক্রিকেট খেলা দেখার পাশাপাশি ছবি আঁকতে ভালবাসে সৌগত। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় সে।

৪৯৭ নম্বর পেয়ে বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র দিব্যজ্যোতি ভট্টাচার্য রাজ্যে সম্ভাব্য তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। দিনে ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা পড়াশুনো করেছে দিব্যজ্যোতি। সৌগতর মত তার এই কৃতিত্বের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের পাশাপাশি পরিবারের সকলের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করলেও, মাকেই সবথেকে বেশী নম্বর দিয়েছে দিব্যজ্যোতি। সাফল্যের জন্য পাঠ্য পুস্তককে খুঁটিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছে বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র দিব্যজ্যোতি ভট্টাচার্য।

৪৯৭ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিশা বসাক। নাচ করা এবং ডায়েরি লেখাই তার নেশা বলে জানিয়েছে তানিশা। নিটের ফর্ম ফিল আপ করলেও এগ্রিকালচার নিয়ে পড়াশুনো করেই ভবিষ্যতে বড় হতে চায় তানিশা।

উত্তরদিনাজপুরের তরঙ্গপুর এন কে হাই স্কুলের ছাত্রী মিরা দেব শর্মা ৪৯৭ নম্বর পেয়ে রাজ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর দাড়িকা প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র শুভাশিস দাস ৪৯৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।এর পাশাপাশি বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র সৌরভ পাল এবং অভিক ভৌমিক ৪৯৬ নম্বর পেয়ে এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে সম্ভাব্য চতুর্থ স্থান দখল করেছে।

অন্যদিকে, মালদার এসি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র নবারুণ সরকার ৪৯৬ নম্বর পেয়ে রাজ্য সম্ভাব্য চতুর্থ স্থান দখল করেছে। নিয়মিত পড়াশুনো করার পাশাপাশি গান চর্চাও নবারুণের প্রতিদিনের কর্মসূচীর মধ্যে পড়ে। পড়াশুনোর ফাঁকে ফাঁকে রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়েই তার ছাত্রজীবনের প্রতিটি দিন কাটে বলে জানিয়েছে নবারুণ। নবারুণ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিল বলে জানিয়েছে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা।

কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলের ছাত্র কৃষ্টি ধর পন্ডিত ৪৯৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। করোনার কারণে শেষ পর্যন্ত দুটি পরীক্ষা না হওয়ায় অনেকটাই হতাশ কোচবিহারের কৃষ্টি।

আলিপুরদুয়ারের ম্যাক উইলিয়াম হাই স্কুলের ছাত্র অবিনাশ কার্জি ৪৯৫ নম্বর পেয়ে এবারের উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে সম্ভাব্য পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে করোনার মত মারণ ব্যাধির ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করেতে চায় অবিনাশ। দিনে ১২ ঘন্টা পড়ার ফলই উচ্চমাধ্যমিকের মার্কশিটে প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়েছে অবিনাশ।

অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র মৃন্ময় মন্ডল উচ্চমাধ্যমিকে ৪৯৫ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। ২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল মৃন্ময়।অবিনাশ এবং মৃন্ময়ের পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার জেলার কামাখ্যাগুড়ি হাই স্কুলের ছাত্র ময়ূখ নন্দী এবং জলপাইগুড়ি রাষ্টীয় বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সমৃদ্ধি গুহ ৪৯৪ পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন।

৪৯৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশের মধ্যে সম্ভাব্য ষষ্ঠ স্থান দখল করে নিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমার শিবমন্দিরের শ্রী নরসিংহ বিদ্যাপীঠের ছাত্রী সায়ন্তিকা রায়। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেই তার এই সাফল্য। সায়ন্তিকাকে সম্বর্ধনা দিতে শুক্রবার তার বাড়িতে যান শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ রায়।
কোচবিহার মণীন্দ্রনাথ হাই স্কুলের ছাত্রী মহাশ্বেতা হোম রায় ৪৯৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সম্ভাব্য সপ্তম স্থান অধিকার করেছে।