সারা দেশের বিচারে এবার রাজ্য থেকে সেরা শিক্ষকের মর্যাদা পাচ্ছেন দুই শিক্ষক

নিজস্ব সংবাদদাতা,আলিপুরদুয়ারঃ সারা দেশের বিচারে এবার রাজ্য থেকে সেরা শিক্ষকের মর্যাদা পাচ্ছেন দুই শিক্ষক।তাঁদের মধ্যে একজন দুর্গাপুরের নেলিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক করিমুল হক ও অপর জন আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকা ভুটানের তাদিং পাহাড়ের কোলে অবস্থিত পৃথিবীর মধ্যে টোটো জনজাতিদের এক মাত্র আবাস ভূমি টোটোপাড়া ধনপতি টোটো মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিসা ঘোষাল।আগামী ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পুরষ্কার গ্রহণ করবেন ওই দুই শিক্ষক।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই শনিবার খুশির হাওয়া তৈরি হয় জেলার শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ও ছাত্রছাত্রী মহলে।আদতে মিসাদেবী শিলিগুড়ির বাসিন্দা।২০০৮সালে দুর্গম টোটোপাড়ার ওই একমাত্র উচ্চবিদ্যালয়ে যখন কাজে যোগ দেন, সে বছর ওই স্কুল থেকে মাত্র এক জন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছিল।যে হার এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে আশি শতাংশেরও বেশি। পিছিয়ে পড়া ওই আদিম জনজাতির পড়ুয়াদের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্যে টোটোপাড়ায় একটি স্কুল গড়ে তোলা হলেও, দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থার কারনে শিক্ষকদের এক শ্রেণির অনীহায়, স্কুলের পরিকাঠামো তেমন ভাবে উন্নত হতে পারেনি।কিন্তু মিসা ঘোষাল ওই স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে ডালপালা মেলতে শুরু করে ওই স্কুলটি।তিনি টোটো জনজাতির ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখি করে বোঝাতে সক্ষম হন যে, লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই আজকের পৃথিবীতে।টোটোপাড়াকে মন থেকে ভালোবেসে এক সময় মাদারিহাটের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান মিসা ঘোষাল।কারন শিলিগুড়ি থেকে টোটোপাড়ায় যাতায়াত করে স্কুল করাটা এক অসম্ভব কল্পনা মাত্র।কারন বর্ষার তিন মাসের বেশির ভাগ সময়েই সড়ক যোগাযোগে টোটোপাড়া বিছিন্ন হয়ে পড়ে তিন পাহাড়ি নদী তিতি, বাঙরি ও হাউরি নদীর জলোচ্ছ্বাসে।রীতিমতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে টোটোদের দেশে পৌঁছতে গিয়ে এক অসাধ্যকে সাধন করেছেন ওই দিদিমনি।যারই ফলস্বরূপ ওই সেরা শিক্ষকের মর্যাদা পেতে চলেছেন মিসা ঘোষাল। প্রধানশিক্ষকা মিসা ঘোষাল টোটো সংষ্কৃতি নিয়ে গবেষণা করছেন। এছাড়া টোটোদের নিয়ে তার পুস্তক টোটো কিশোরী কন‍্যা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।