পেন্সিল স্কেচের মাধ্যমে মানুষের প্রতিকৃতি আঁকা এবং দেওয়াল অঙ্কন রঞ্জনের ভালোবাসার কাজ

শিল্পী পালিতঃ আজ আমাদের আত্মকথা বিভাগে চিত্র শিল্পী রঞ্জন রায়ের কথা মেলে ধরা হচ্ছে। পেন্সিল স্কেচের মাধ্যমে মানুষের প্রতিকৃতি আঁকা এবং দেওয়াল অঙ্কন রঞ্জনের ভালোবাসার কাজ—

আমি রঞ্জন রায়, জন্ম শিলিগুড়িতে। বেড়ে ওঠা ও লেখাপড়া শিলিগুড়িতেই। এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার বাল্য জীবন, কৈশোর এবং যৌবন কাটছে। আমার পিতা স্বর্গীয় রঞ্জিত রায়, যিনি এই শহরেই শিলিগুড়ি পুলিশের হোমগার্ড ডিপার্টমেন্টে কর্মরত ছিলেন। তিনি কাঠের উপর নকশা করাতে পারদর্শী ছিলেন। তার থেকেই হয়তো আমার মধ্যে এইরূপ শিল্প কাজের আগ্রহ এসেছে। আমার মা মালতি রায়, যিনি গৃহিনী। ছোটবেলা থেকেই চিত্রশিল্পের প্রতি আমার খুব আগ্রহ ছিল। নিজস্ব কিছু কারনের জন্য ছোট থেকে আমি কোনদিন আঁকা শেখার সুযোগ পাইনি কিন্তু শিল্পের প্রতি ভালোবাসার জন্য আমাকে আটকে রাখা যায়নি। যেখানেই মনে হতো সেখানেই ছবি আঁকার চেষ্টা করতাম। এমনকি গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে বসেও লেখা বাদ দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে খাতার পেছনের দিকে ছবি আঁকার চেষ্টা করতাম। বন্ধুবান্ধবদের স্কুলের হাতের কাজ, প্রাকটিক্যাল খাতায় এঁকে দেওয়া, এগুলোই ছিল আমার চিত্রশিল্পের প্রাথমিক শিক্ষা। এরপর পাড়ার কালী পূজা, সরস্বতী পূজায় নানারকম কাজ করে শেখার চেষ্টা করতাম। কোনদিনও ভাবিনি শিল্পচর্চাকেই আমি আমার জীবনের অংশ বানিয়ে নেবো। কিন্তু ২০১৩ এ আমার পরিচয় হয় চিত্রশিল্পী বঙ্গরত্ন পরিতোষ পাল মহাশয়ের সাথে। এরপর থেকে ওনার কাছ থেকেই চিত্রশিল্প সম্পর্কে বিশদে শেখার সুযোগ পেলাম। ২০১৪ থেকে আঁকা শেখানো করি। পেন্সিল স্কেচের মাধ্যমে মানুষের প্রতিকৃতি আঁকা আমার সবচেয়ে ভালোবাসার কাজের মধ্যে একটা। শুধুমাত্র কাগজে বা ক্যানভাসেই নয়, দেওয়াল অঙ্কনও আমার ভালোবাসার কাজ। গত বছর এনজেপি রেল স্টেশনের রানিং রুমের বাইরের দেওয়ালে আমার আঁকা রেল ও মানুষের কাছে অনেক প্রশংসিত হয়। কিছু সংবাদ মাধ্যমে আমার সেই কাজ দেখানো হয়েছিল এবং কিছু পত্রিকায় ছাপানো হয়েছিল। এরপর গতবছর একটি ক্লাবের দুর্গা পূজায় আমার কাজ প্রশংসিত হয়। এছাড়াও আমার আরো অনেক কাজ মানুষকে আনন্দ দিয়েছে। ভবিষ্যতে আমি আমার শিল্পকর্ম দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে চাই।
১ নং ডাবগ্ৰাম, সূর্যনগর, শিলিগুড়ি।